পাইলস (Piles) বা হেমোরয়েডস (Hemorrhoids) হলো মলদ্বার ও রেকটামের ভেতরের রক্তনালী ফুলে যাওয়া বা শিরা স্ফীত হওয়া। এটি খুব সাধারণ একটি সমস্যা, বিশেষ করে যাদের দীর্ঘদিন কোষ্ঠকাঠিন্য থাকে বা বেশি সময় ধরে বসে থাকতে হয়।
🔹 পাইলস কেন হয়
পাইলস হওয়ার প্রধান কারণগুলো হলো:
- কোষ্ঠকাঠিন্য – শক্ত মল চাপ দিয়ে বের করতে গেলে শিরায় চাপ পড়ে।
- দীর্ঘদিন ডায়রিয়া – ঘন ঘন মলত্যাগেও চাপ সৃষ্টি হয়।
- অতিরিক্ত ওজন (স্থূলতা) – মলদ্বারে চাপ বাড়ায়।
- গর্ভাবস্থা – গর্ভকালীন সময়ে রক্তনালীতে চাপ বেড়ে যায়।
- বসে থাকা জীবনযাপন – দীর্ঘ সময় বসে থাকলে রক্ত জমে থাকে।
- ভারী জিনিস তোলা – হঠাৎ পেটের চাপ বেড়ে শিরা ফেঁপে যায়।
- কম আঁশযুক্ত খাবার – হজমে সমস্যা ও কোষ্ঠকাঠিন্য বাড়ায়।
🔹 পাইলসের লক্ষণ
- মলদ্বারে চুলকানি বা জ্বালা
- টয়লেট করার সময় রক্ত পড়া (উজ্জ্বল লাল)
- মলদ্বারে ব্যথা বা অস্বস্তি
- মলদ্বার থেকে ফোলা মাংসপিণ্ড বেরিয়ে আসা (প্রল্যাপ্সড হেমোরয়েড)
- বসে থাকলে অস্বস্তি বা চাপ অনুভূত হওয়া
🔹 পাইলসের চিকিৎসা
ঘরোয়া/প্রাথমিক ব্যবস্থা:
- আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া – শাকসবজি, ফলমূল, ভুসি, ডাল।
- প্রচুর পানি পান করা – প্রতিদিন অন্তত ২-৩ লিটার।
- কোষ্ঠকাঠিন্য এড়ানো – ঝাল, ভাজা খাবার ও বেশি মসলা কমানো।
- গরম পানির সিটজ বাথ – দিনে কয়েকবার ১০-১৫ মিনিট গরম পানিতে বসা।
- ব্যায়াম করা – নিয়মিত হাঁটা বা হালকা ব্যায়াম।
- দীর্ঘ সময় বসে থাকা এড়ানো।
চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ:
- মল নরম করার ওষুধ (stool softener, laxatives)
- ব্যথা বা চুলকানি কমানোর জন্য ক্রিম/সাপোজিটরি
- প্রদাহ কমানোর জন্য মলম বা ওষুধ
সার্জারি বা উন্নত চিকিৎসা:
- রাবার ব্যান্ড লিগেশন (গুটিতে রাবার ব্যান্ড লাগানো)
- ইনজেকশন থেরাপি (স্ক্লেরোথেরাপি)
- লেজার চিকিৎসা
- গুরুতর ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার
👉 যদি রক্তক্ষরণ বেশি হয়, টয়লেটে যাওয়ার সময় তীব্র ব্যথা হয় বা মলদ্বারে বড় গুটি বেরিয়ে আসে, তবে অবশ্যই ডাক্তার (প্রক্টোলজিস্ট/সার্জন) এর পরামর্শ নিতে হবে।