রক্তে এলার্জি (Blood Allergy) সাধারণত শরীরের ইমিউন সিস্টেমের অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়ার কারণে হয়। এটি সরাসরি “রক্তে এলার্জি” নামে কোনো রোগ নয়, তবে রক্তের মাধ্যমে এলার্জির প্রতিক্রিয়া সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। একে সাধারণত হাইপারসেন্সিটিভিটি রিঅ্যাকশন বা অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশন বলা হয়।
✅ রক্তে এলার্জির সম্ভাব্য কারণ
- খাদ্যজাত এলার্জি – দুধ, ডিম, বাদাম, সী-ফুড, ঝাল-মশলা ইত্যাদি।
- ওষুধ – অ্যান্টিবায়োটিক (পেনিসিলিন), ব্যথার ওষুধ, কিছু ইনজেকশন ইত্যাদি।
- রক্তসঞ্চালন (Blood Transfusion) – অন্যের রক্ত নিলে মেলেনি এমন গ্রুপে প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
- পোকামাকড়ের কামড় – মৌমাছি, মশা বা অন্য কীটের কামড়ে রক্তে অ্যালার্জি ছড়াতে পারে।
- পরিবেশগত কারণ – ধুলো, পরাগরেণু, ফাঙ্গাস, রাসায়নিক বা ধোঁয়া।
- বংশগত কারণ – পরিবারে এলার্জির ইতিহাস থাকলে ঝুঁকি বেশি।
✅ রক্তে এলার্জির লক্ষণ
- ত্বকে লালচে দাগ, চুলকানি বা হাইভস (চাকা চাকা ফুসকুড়ি)
- চোখ লাল হওয়া, পানি পড়া, ফোলা
- ঠোঁট, মুখ বা গলা ফুলে যাওয়া
- শ্বাসকষ্ট বা শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া (অ্যাজমার মতো)
- মাথা ঘোরা, দুর্বল লাগা
- জ্বর বা শরীরে ব্যথা
- গুরুতর অবস্থায় অ্যানাফাইল্যাক্সিস → রক্তচাপ দ্রুত কমে যাওয়া, শ্বাস বন্ধ হয়ে আসা (জরুরি অবস্থা)
✅ চিকিৎসা ও করণীয়
- অ্যালার্জেন এড়িয়ে চলা – কোন খাবার, ওষুধ বা পদার্থে এলার্জি হয় তা চিহ্নিত করে এড়িয়ে চলা।
- ওষুধ সেবন
- অ্যান্টিহিস্টামিন (যেমন সিটিরিজিন, লরাটাডিন) – চুলকানি ও ফুসকুড়ি কমাতে।
- স্টেরয়েড (ডাক্তারের পরামর্শে) – তীব্র প্রদাহ কমাতে।
- ব্রঙ্কোডাইলেটর (ইনহেলার) – শ্বাসকষ্ট থাকলে।
- এপিনেফ্রিন ইনজেকশন (EpiPen) – অ্যানাফাইল্যাক্সিস হলে জরুরি প্রয়োগ করতে হয়।
- ডাক্তারের পরামর্শে অ্যালার্জি টেস্ট – কোন জিনিসে এলার্জি হয় তা নির্ধারণ করার জন্য।
- ইমিউনোথেরাপি (Allergy Shots) – দীর্ঘমেয়াদে চিকিৎসকের পরামর্শে প্রয়োগ করা যায়।
- জরুরি অবস্থা হলে (শ্বাসকষ্ট, গলা ফুলে যাওয়া, অজ্ঞান হওয়া) → সাথে সাথে হাসপাতালে নিতে হবে।
👉 যদি আপনার বারবার রক্তে এলার্জির মতো সমস্যা হয়, তবে একজন অ্যালার্জি বিশেষজ্ঞ বা হেমাটোলজিস্ট ডাক্তারের কাছে যাওয়া জরুরি।