টিবি (Tuberculosis / যক্ষা রোগ) হলো একধরনের সংক্রামক রোগ যা সাধারণত Mycobacterium tuberculosis নামক জীবাণুর কারণে হয়ে থাকে। এটি মূলত ফুসফুসে হয়, তবে শরীরের অন্যান্য অংশেও (হাড়, কিডনি, মস্তিষ্ক, লিম্ফনোড ইত্যাদি) হতে পারে।
✅ টিবি হওয়ার কারণ:
- সংক্রমণ:
আক্রান্ত ব্যক্তির কাশি, হাঁচি বা থুথুর মাধ্যমে জীবাণু বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। সেই জীবাণু শ্বাসের সাথে অন্য মানুষের ফুসফুসে প্রবেশ করলে টিবি হতে পারে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে:
যেমন অপুষ্টি, ডায়াবেটিস, এইডস (HIV), দীর্ঘমেয়াদি স্টেরয়েড/ইমিউনোসপ্রেসিভ ওষুধ সেবন করলে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
- অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ:
ভিড়, বাতাস চলাচল কম এমন জায়গায় থাকা।
- অপুষ্টি ও দুর্বলতা:
শরীর দুর্বল হলে জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে না।
✅ টিবি রোগের সাধারণ লক্ষণ:
- দীর্ঘদিন (২-৩ সপ্তাহের বেশি) কাশি, অনেক সময় রক্তসহ কাশি।
- জ্বর, বিশেষ করে বিকেল বা রাতে জ্বর আসা।
- রাতের বেলা ঘেমে যাওয়া।
- ওজন কমে যাওয়া, ক্ষুধামন্দা।
- দুর্বলতা ও ক্লান্তি।
- বুকে ব্যথা বা শ্বাসকষ্ট (ফুসফুসে হলে)।
✅ টিবি রোগের চিকিৎসা:
👉 টিবির চিকিৎসা পুরোপুরি সম্ভব, তবে নিয়ম মেনে ওষুধ খেতে হবে।
- DOTS (Directly Observed Treatment, Short-course):
সরকারীভাবে বিনামূল্যে দেয়া হয়। সাধারণত ৬ মাস বা তার বেশি সময় ধরে ওষুধ খেতে হয়।
- প্রথম ২ মাস: একসাথে কয়েকটি অ্যান্টি-টিবি ওষুধ (Isoniazid, Rifampicin, Ethambutol, Pyrazinamide)।
- পরবর্তী ৪ মাস: কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ চলতে থাকে।
- পুরো কোর্স সম্পূর্ণ করা জরুরি:
মাঝপথে ওষুধ বন্ধ করলে রোগ সারবে না, বরং ড্রাগ-রেজিস্ট্যান্ট টিবি হতে পারে, যা অনেক কঠিন ও ব্যয়বহুল চিকিৎসা।
- পুষ্টিকর খাবার ও বিশ্রাম:
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
- সংক্রমণ প্রতিরোধ:
রোগীকে আলাদা রাখা, কাশির সময় মুখ ঢেকে রাখা, হাওয়াযুক্ত ঘরে থাকা।
👉 বাংলাদেশে সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিনামূল্যে টিবি পরীক্ষা ও চিকিৎসা করা হয়।